Skip to main content

সিক্স ডিগ্রিস অফ সেপারেসন



"১৯২৯ সালে ফির্গিস কারিন্থি নামক হাঙ্গেরিয়ান এক সাহিত্যিক "চেইন" বা শিকল নামে কিছুসংখ্যক ছোট গল্প নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেন। গল্পের নামকরণ হয় ওই বইয়েরই শিকল নামক একটি গল্পের নামকরণ অনুসারে। ওই গল্পে কারিন্থি প্রথম conceive বা কল্পনা করেন যে তখনকার পৃথিবীর ১৫০ কোটি মানুষের মধ্য থেকে যেকোন দুজন মানুষকে রেন্ডমলি পছন্দ করলে তাদের মাঝে সর্বোচ্চ ছয়জনের বন্ধুত্বের একটি শিকল তৈরী করে ওই দুইজনকে সংযুক্ত করা সম্ভব। এটাকে ইংরেজিতে বলে "সিক্স ডিগ্রীস অফ সেপারেশন"। এরপর ১৯৬৭ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্ট্যানলি মিলগ্রাম এক যুগান্তকারী এক্সপেরিমেন্ট করে "সিক্স ডিগ্রীস অফ সেপারেশন" তত্বের একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রদান করেন। মিলগ্রামের এক্সপেরিমেন্টের উদ্যেশ্য ছিল দুইজন মার্কিন নাগরিকের মাঝে ন্যূনতম দূরত্ব জানা। শুরুতেই উনি একজন টার্গেট মানুষ ঠিক করে ৫০০ মানুষ টেলিফোন বুক থেকে রেন্ডমলি পছন্দ করে সবার নামে একটি করে পোস্টকার্ড পাঠালেন।
পোস্টকার্ডে ইন্সট্রাকশন ছিল "আপনি যদি টার্গেট ব্যক্তিকে সরাসরি চিনেন তাহলে উনার কাছে পোস্টকার্ডটি রি-পোস্ট করুন এবং সাথে পোস্ট কার্ডে আপনার নামটি সংযুক্ত করুন। আর টার্গেট ব্যক্তিকে যদি আপনি না চিনুন তাহলে আপনার জ্ঞানত যিনি টার্গেট ব্যক্তিকে চেনার সবচেয়ে বেশি সম্ভবনা তার কাছে পোস্টকার্ডটি রিপোস্ট করুন এবং সাথে পোস্ট কার্ডে আপনার নামটি সংযুক্ত করুন। দেখা গেল যেইগুলো টার্গেট ব্যক্তির কাছে পৌঁছেছে সেগুলো গড়ে ৫.৫ হাতবদলের মাধ্যমেই পৌঁছেছে যেটা যে কাউকে কারিন্থির সিক্স ডিগ্রীস অফ সেপারেশনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই six degrees of separation এখন স্মল-ওয়ার্ল্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এই স্মল-ওয়ার্ল্ড ধারণার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে এই পৃথিবীর সবাই সবার থেকে সর্বোচ্চ ছয়জন পরিচিত মানুষের শিকল দূরে। এখন স্মল-ওয়ার্ল্ড বলা হয়!"_____________________প্রফেসর কাম্রুল হাসান মামুন।

এখানে বলা প্রয়োজন, বর্তমানের ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাউকে খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক মডেল এরকম ৫/৬ টি নোডের ভিত্তিতে সংযোগ স্থাপন করে থাকে। প্রকৃতির এরকম অসংখ্য নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় কানেকশন সিস্টেম এরকম প্যাটার্ন ব্যবহার করে থাকে। প্রমানঃ আমাদের মস্তিস্ক।
আমি প্রশ্ন করতে চাচ্ছি, এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরুস্কার প্রাপ্ত পল রোমারের 'চার্টার্ড সিটি' তত্ত কি এরকম ৫/৬ সংখ্যক শহরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে একটি আদর্শ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা তৈরি করতে আদৌ সক্ষম হবে? সে ক্ষেত্রে গ্লোবালাইজেইশনের নামে পাশ্চাত্য আগ্রসন কিছু ক্ষেত্রে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা যায়। নেটওয়ার্ক সিস্টেম সম্পর্কে জানতে নিচের লিঙ্কটি একটি ভালো সূচনা হতে পারেঃ
http://barabasi.com/f/124.pdf

Comments

Popular posts from this blog

স্বার্থ

অখিল ভুবনে নীতি বলিয়া কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই। যাহার অস্তিত্ব বিরাজমান তাহা হইল স্বার্থ। ইহা সত্ত্বেও কিছু সংখ্যালঘিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ নীতি নামক অপদার্থকে গলাধঃকরণ করিয়া ধ্বংস ও অস্তিত্তের দোলনায় পেন্ডুলামের মতো দুলিতে পছন্দ করিয়া থাকেন বলিয়া বোধ করি। আর বাকি রইল যাহারা, তাহাঁরা স্বার্থ নামক পদার্থকে গ্রহণ করিয়া নশ্বরতাকে আপন দুয়ারে আমন্ত্রণ করিয়া থাকেন। দুঃখজনক হইলেও ইহা সত্য যে মানব সন্তান ভুলিয়া যায়, দৈহিক মৃত্যুর পূর্বেই আত্মা মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করিয়া থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে একাধিক বার করিয়া থাকে। পার্থক্য হইল এই যে, শারীরিক ভাবে মরিলে দেখিতে হয় না দেহে কেমন করিয়া পচন ধরিতেছে। তবে আত্মার পচন শুধু দেখিলেই চলে না, উপভোগও করিতে হয় বটে।

The Prince Charming

So, let's talk about Mr. Prince Charming. রাজকুমারীর রুপকথার গল্প গুলো পড়লে একটা বিষয় সব সময় ফুটে ওঠে তা হলো প্রত্যেকটা গল্পে একজন সুপুরুষ যুবরাজ থাকবে যে রাজকুমারীকে সমূহ বিপদের হাত থেকে বাঁচাবে এবং they will end up living happily forever! খুব ছোট বেলায় এই গল্প গুলো বাচ্চাদের মনে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয় আর কোন কারণে নয়, লিঙ্গ পরিচয়কে সমাজের প্রচলিত কাঠামোর আদলে গ্রহণ করে নেওয়ার জন্য। এর ইমপ্যাক্টটা হয় খুব মজার। প্রত্যেকটা ছেলে প্রেমে পড়লে সে মনে করে, তার ভালোবাসার মানুষটি প্রচ ণ্ড কষ্টে আছে এবং তাকে যে করেই হোক তার রাজকুমারীকে উদ্ধার করতে হবে। মেয়েরা সাধারণত এ ধরণের আবেগের প্রতি এক ধরণের পাল্টা আবেগ অনুভব করে এবং এককেন্দ্রিক গুরুত্বকে আপন করে নিয়ে প্রত্যাশিত ভুমিকা পালন করতে থাকে। সমস্যাটা হয় বিয়ে হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরে, যখন আকর্ষণটা কাটতে আরম্ভ করে কেননা মানব সম্প্রদায়ের জন্য যে কোন আকর্ষণের উপযোগ তার যোগানের পরিমাণের সাথে বিপরীত মুখী সম্পর্ক বজায় রাখে। অবশ্য একদম প্রগৈতিহাসিক সময়কাল থেকেই মানব সম্প্রদায়ের পুরুষ সদস্যদের প্রধান ভুমিকা ছিল খাদ্য সংগ্রহ এবং নিজের ...