Skip to main content

প্রেম বিষয়ক কড়চা


"প্রতিটি সার্থক প্রেমের কবিতা বলতে বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে পায় নি, প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমের কবিতা বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে।" 
প্রেম কি? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি রাজি নই। কেননা এর উত্তর লুকিয়ে আছে বস্তুবাদী দর্শনে। বস্তুবাদ আমাদেরকে শেখায় প্রেম কিছু জৈবিক তরল পদার্থের মিথস্ক্রিয়া। কিন্তু সহজ এই স্বীকারোক্তিতে রয়েছে ভয়াবহ এক বিসন্নতা, রয়েছে তুচ্ছতার গ্লানি। আর বস্তুবাদ মানেই মানবশ্রেষ্ঠতাকে ভূলুণ্ঠিত করে কদাকার সত্যকে গ্রহণ করে নেওয়া। কিন্তু আজ আমি কথা বলতে চাই প্রেমের সংজ্ঞা নিয়ে নয়, বরং প্রেমে পোড়ার অনুভুতি নিয়ে। জী হ্যাঁ, ওটা কোন টাইপো নয়, সরল-চিত্তে আমি পোড়া শব্দটি ব্যবহার করেছি। এর ব্যাখ্যা আমি অবশ্যই দিব।
প্রেমের ব্যাপারে আগ্রহ নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তারচেয়েও কঠিন অবশ্য কোনদিন প্রেমে পড়েনি এমন একটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে খুঁজে বের করা। ছোটবেলার প্রেম তো আরও উত্তেজনাপূর্ণ। ‘লিট্যাল ম্যানহ্যাটেন’ দেখে ছোট বেলার প্রেম কল্পনাকে গ্রাস করে নেয়নি এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে।প্রেমকে অস্বীকার করার কিছু নেই। সবাই প্রেমকে আশা করে। সবাই প্রেমকে চাই। যার নেই সেও চাই; যার আছে সেও চাই। যার চলে গেছে কিন্তু কোনদিন আসবে না সেও চাই; আবার যার কোনদিন যাবে না, সেও চাই। কিন্তু ওই চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে একটি বড় দ্বন্দ্ব রয়েছে। সবাই শুধু প্রেমের পিছে ছোটে। ছোটে আর কাঁদে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই পায় না।
আসলে প্রেম মানে না পাওয়া। দুজন দুজনকে দেখেতে না পেয়ে কাঁদে-এই না পাওয়াই প্রেম। এই যে না পাওয়ার অপ্রাপ্তি, হৃদয় নিংড়ানো হাহাকার, সপ্ত পারাবারের দূরত্ব কিংবা অভিমানের বিচ্ছেদ এসব থেকেই তো প্রেম উৎপত্তি। অপ্রাপ্তির হাহাকারই দুটি হৃদয়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুঠোফনে বেঁধে রাখে। রাতের পর রাত চলে যায় মেসেঞ্জারের নোটিফিকেশনের পরিচিত আওয়াজটি শুনতে শুনতে। স্মার্টফোনের স্ক্রিনে ভেসে ওঠা নিছক কতগুলো লেখা আমাদেরকে কাঁদায়, আমাদেরকে হাঁসায়, আবার অভিমান করতে শেখায়; তবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে নয়, ঘুরে ফিরে একি গল্প! কিন্তু যে মানুষটিকে নিয়ে গল্পটি গড়ে উঠছে, তার রহস্যময় আচরণের যেন শেষ নেই। কবিগুরুর ভাষায়, ‘শেষ হইয়াও হইল না যে শেষ।’ এই রহস্যের উৎপত্তি অপ্রাপ্তি থেকে। আর অপ্রাপ্তি জন্ম দেই অজানা আশঙ্কার। এজন্যেই এই বিশেষ মানুষটি যখন একটুর জন্যে মুখ ফিরিয়ে নেই, তখন অজানা আতঙ্ক আমাদেরকে গ্রাস করে। এমনকি যখন উড়োজাহাজের শব্দ শুনে সে আকাশে তাকাই, তখনও মন চমকে উঠে ভাবতে থাকে, কেন সে আকাশে তাকাল? তবে কি সে উড়োজাহাজের দিকে তাকিয়ে অন্য কারোর কথা ভাবছে? রহস্যই প্রেম। এই রহস্য সৃষ্টি হয় দূরত্বে। আর দুজনের দূরত্বেই প্রেমের বসবাস। লাইলি-মজনু, রোমিও জুলিয়েট সবার মধ্যে এতো প্রেম কেন? কারণ কেউই কাউকে পাই নি। পেয়ে গেলে সব প্রেম শেষ। বিয়ের সাত দিন পার হত না, আলু বেগুন আর ইলিশ মাছ নিয়ে ঝগড়া শুরু করে দিত!
কিন্তু এতো গেল অপ্রাপ্তির প্রেম। তাই বলে কি প্রাপ্তির পরে আর প্রেম থাকে না? বিবাহিত জীবনে কি প্রেমের উধারণ নেই? কবি আব্দুল্লাহ আবু সাইদ দেখিয়েছেন, এখানেও মানুষের প্রেম না পাওয়াতেই। যদি পাওয়ার মধ্যে কোথাও প্রেম দেখা যায় তবে বুঝতে হবে ওই পাওয়ার মধ্যে, কোথাও-না কোথাও না পাওয়ার যন্ত্রণা কাজ করছে।কাছে থাকলেও তাদের ভেতর রয়েছে এক সীমাহীন দূরত্ব যা তারা কেউ অতিক্রম করতে পারছে না। আর এজন্যই এতো মরিয়া আর উৎকণ্ঠিত হয়ে রয়েছে পরস্পরের জন্যে। প্রাপ্তির ভেতরেও রয়েছে অপ্রাপ্তির বেদনা। গোবিন্দ দাস তাই যথার্থই লিখেছেন, 
'দুঁহুঁ কোড়ে দুহুঁ কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া।'
বাঙলা করলে এর তর্জমা দাঁড়ায়, দুজন শুয়ে রয়েছে দুজনের কোলে। তবু দুজন দুজনকে হারিয়ে ফেলেছে ভেবে কাঁদছে। যারা প্রেম করেছে তারা জানে, কাছে থেকেও তৈরি হতে পারে কত অনাকাঙ্ক্ষিত অস্বাভাবিক দূরত্ব। এই দূরত্ব মানুষকে পোড়ায়। পোড়া মনে সৃষ্টি হয় প্রেম। মন বলে, 
'ও কি এল, ও কি এল না, 
বোঝা গেল না, গেল না।'
প্রেম যেন এক অসহ্য সুখ, অকথ্য কষ্ট। সুখ, কারণ ভালোবাসার মানুষটি কাছে রয়েছে তাই। দুঃখ, কারণ তাকে হারানোর ভয়। এই হারানোর ভয়টি যখন চলে যায় তখন প্রেমও চলে যায়।
আমাদের যখন কাউকে ভালো লাগে, তখন কিন্তু আমরা পুরোপুরি তাকে ভালোবেসে ফেলি না। প্রথমে তার কোন একটি দিক আমাদের ভালো লাগে। সেই ভালো লাগার রঙটি ধীরে ধীরে রঙধনুর মতো ছড়াতে থাকে। এরপর গোটা মানুষটি আমাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। এক সময় তার ভেতরের খারাপ দিকটিও আমাদের আর অতটা খারাপ লাগে না এবং একসময় সেই খারাপ লাগাটুকু আমরা যুক্তি দিয়ে পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করি। জার্মান দার্শনিক কানট সাহেব এজন্যই বলেছেন, 
‘প্রথমে আমরা সিদ্ধান্ত নেই, পরে আমরা তার পিছনে যুক্তি সাঁজায়।’
তো এই ভালোলাগার মানুষটি আর আট-দশটা মানুষের মতো থাকে না; একটু বেশিকিছু হয়ে ওঠে, ধীরেধীরে। যতই ভালোলাগা বাড়তে থাকে আমাদের চোখে সে আরও বড় হয়ে ওঠে। এভাবে বড় হতে হতে একসময় সে হয়ে ওঠে আমাদের জীবনের সমান। এরপর তা জীবনকে অতিক্রম করতে থাকে এবং হয়ে ওঠে আমাদের ঈশ্বর। আমাদের সমস্ত সত্তাকে গ্রাস করে সে ভরিয়ে দেয় এক অপার্থিব আনন্দে যার সৃষ্টি এই ভুবনে নয়। সবকিছুকে মনে হয় সুন্দর, কেননা সবকিছুতে প্রতিফলিত হয় তার ছবি, তার স্পর্শ। কিন্তু প্রেমের ঈশ্বর বড়ই নিষ্ঠুর, প্রচণ্ড স্বৈরাচারী। যখন মানুষটি আমাদের চোখে ছোট ছিল তখন মানুষটিকে হারানোর ভয়ও ছিল ছোট। কিন্তু ভালোলাগার সাথে সাথে সে এতো বড় হয়ে ওঠে যে তার হারানোর আতঙ্কও হয়ে ওঠে পাহাড়সম। এই আতঙ্ক আমাদেরকে জিম্মি করে রাখে, বানিয়ে দেই মানুষটির ক্রীতদাস। যে মানুষটিকে দেব/দেবীর পর্যায়ে তুলে নিয়ে আমরা ভেসে বেড়ায় স্বর্গে, যার প্রতিটি স্পর্শ আমাদেরকে এতো প্রবল ভাবে নাড়া দেই, তাকে তুচ্ছতায় নামিয়ে এনে সুখের স্বর্গ হারানোর ক্ষমতা আমাদের অনেকেরই থাকে না। ভালবাসলে গোটা হৃদয়টি দিয়ে দিতে হয়। বিনিময়ে তো গোটা হৃদয়টাই চাই। না চাইলেও চাইতে হয়। কম দিলে আমাদের অভিমান হয়। কিন্তু তাই বলে তার প্রেমকেও তো ছাড়তে পারি না। যে মানুষটিকে একটু একটু করে বড় করে তুলেছি তাকে ছেড়ে দিলে তো তার থেকে পাওয়া সুখও ছোট হয়ে গেল। বড় সুখের পরে ছোট সুখ হৃদয় নিতে চায় না। হৃদয় বড়ই অভিমানী।
প্রেমের উৎপত্তি শ্রদ্ধা থেকে। আব্দুল্লাহ আবু সাইদ বলেছেন, তাদেরই আমরা ভালবাসি যাদের সামনে আমরা নতজানু হয়ে গৌরব বোধ করি। যাকে আমরা শ্রদ্ধা করি না বা বড় ভাবতে পারি না, তাকে ভালবাসা দেওয়া কঠিন। এজন্য যাদের আমরা সহজে পেয়ে যাই তাদের ভালবাসতে পারি না। মানুষটি যদি উন্মুক্ত বই হয়, তাকে যদি আনায়াসে পড়েই ফেলা যায় তবে তা একান্ত আমার হল কিভাবে? ভালোবাসার সাথে যে স্বার্থপরতা আঙ্গাঙ্গিক ভাবে জড়িত। অনেকে ভালোবাসার সাথে করুণা, বন্ধুত্বকে এবং মোহকে মিলিয়ে ফেলতে চায়। যে ভালবাসা করুণা থেকে সৃষ্টি কিংবা যে ভালোবাসার বন্ধুত্বের মতো সমতল, সেটি আর যাইহোক ভালোবাসা নয়। তবে তাই বলে যে বন্ধুত্ব ভালোবাসার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ তা কিন্তু নয় বরং ক্ষেত্রবিশেষে তার গুরুত্ব অনেক বেশি। ভালোবাসার পাগলামি তীক্ষ্ণ কিন্তু ক্ষণস্থায়ী, ভালোবাসার বন্ধুত্ব সমতল কিন্তু বিস্তৃত যেখানে নির্বিঘ্নে বসবাস করা যায়। যারা ভালোবাসাকে বন্ধুত্বের সমপর্যায়ে মিশিয়ে দিতে পেরেছে তাদের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নেই, তবে তাকে ভালোবাসা বলতে আমি নারাজ। বরং সেটিকে বলা যেতে পারে ভালোবাসার ছদ্মবেশে বন্ধুত্ব। চার্লস কনটন বলেছেন, 
‘বন্ধুত্ব অনেক সময় ভালোবাসায় পর্যবসিত হয়, কিন্তু বন্ধুত্বের মধ্যে কখনও ভালোবাসা থাকে না।’
ভালোবাসা যেখানে বন্ধুত্ব সেখানে রাগ বা উত্তাপ বিষয় নয়, ব্যক্তি এবং বস্তু উভয়ের সেখানে সম-অবস্থান। অপরদিকে করুণা করে যে ভালোবাসা হয় সেখানে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের অবস্থান বড়ই স্পষ্ট। আর তপ্ত হৃদয় থেকে উচ্ছারিত যে আবেগ সাময়িক ভাবে আমাদেরকে গ্রাস করে তাকে বলতে হবে মোহ। মোহ বড়ই বিপদজনক কেননা এর আবেগ যতটা তীব্র এর ভঙ্গুরতা তার চাইতে দিগুণ। অধিকাংশ প্রেম এই জাতের। মোহ কেটে গেলে আবেগও চলে যাই। প্রকৃত ভালোবাসা রুপান্তরিত হয় ধীরে ধীরে প্লেটোনিক ভালবাসায়। যেখানে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয় নিষ্কাম, হয়ে হয়ে ওঠে বায়বীয়। শরীর যেখানে ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে অনুপস্থিত এবং দুটি মানুষের চেতনাবোধ এক হয়ে ধীরে ধীরে তা শূন্যতায় বিলীন হয়ে যায়। কেননা মানুষ থেকেই প্রেমের সৃষ্টি এবং মানুষমাত্রই নশ্বর।
প্রেম মানুষকে দেয় অসহ্য কষ্ট। তবু মানুষ প্রেমে পড়ে। কারণ তো ওই একটাই! সামান্য মুহূর্তের জন্যে হলেও প্রেমের অনুভুতি মানব অস্তিত্তের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি, তীব্র থেকে তীব্রতর অনুভুতি! এই অনুভুতি মানুষকে তার ক্ষুদ্র জীবনের পরিসীমা থেকে দেয় মুক্তি; কেননা প্রেমে মানুষ তার নিজের মধ্যে বাঁচে না, সে বেঁচে রয় তার প্রিয় মানুষটির হৃদয়ে। আর যেখানে প্রিয় মানুষটি তার ব্রহ্মাণ্ড, তার হৃদয়ে ভালোবাসার মানুষটি অবিনশ্বর হবে, এটাই তো স্বাভাবিক!
১২ আশ্বিন, ১৪২৫।
প্রচ্ছদ চিত্রায়নে কৃতজ্ঞতাঃ পৃথ্বি মেজবাহিন 

Comments

  1. আপনার এই পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনি চাইলে নতুন প্রেমের কবিতা পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।

    ReplyDelete
  2. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

স্বার্থ

অখিল ভুবনে নীতি বলিয়া কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই। যাহার অস্তিত্ব বিরাজমান তাহা হইল স্বার্থ। ইহা সত্ত্বেও কিছু সংখ্যালঘিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ নীতি নামক অপদার্থকে গলাধঃকরণ করিয়া ধ্বংস ও অস্তিত্তের দোলনায় পেন্ডুলামের মতো দুলিতে পছন্দ করিয়া থাকেন বলিয়া বোধ করি। আর বাকি রইল যাহারা, তাহাঁরা স্বার্থ নামক পদার্থকে গ্রহণ করিয়া নশ্বরতাকে আপন দুয়ারে আমন্ত্রণ করিয়া থাকেন। দুঃখজনক হইলেও ইহা সত্য যে মানব সন্তান ভুলিয়া যায়, দৈহিক মৃত্যুর পূর্বেই আত্মা মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করিয়া থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে একাধিক বার করিয়া থাকে। পার্থক্য হইল এই যে, শারীরিক ভাবে মরিলে দেখিতে হয় না দেহে কেমন করিয়া পচন ধরিতেছে। তবে আত্মার পচন শুধু দেখিলেই চলে না, উপভোগও করিতে হয় বটে।

সিক্স ডিগ্রিস অফ সেপারেসন

"১৯২৯ সালে ফির্গিস কারিন্থি নামক হাঙ্গেরিয়ান এক সাহিত্যিক "চেইন" বা শিকল নামে কিছুসংখ্যক ছোট গল্প নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেন। গল্পের নামকরণ হয় ওই বইয়েরই শিকল নামক একটি গল্পের নামকরণ অনুসারে। ওই গল্পে কারিন্থি প্রথম conceive বা কল্পনা করেন যে তখনকার পৃথিবীর ১৫০ কোটি মানুষের মধ্য থেকে যেকোন দুজন মানুষকে রেন্ডমলি পছন্দ করলে তাদের মাঝে সর্বোচ্চ ছয়জনের বন্ধুত্বের একটি শিকল তৈরী করে ওই দুইজনকে সংযুক্ত করা সম্ভব। এটাকে ইংরেজিতে বলে "সিক্স ডিগ্রীস অফ সেপারেশন"। এরপর ১৯৬৭ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্ট্যানলি মিলগ্রাম এক যুগান্তকারী এক্সপেরিমেন্ট করে "সিক্স ডিগ্রীস অফ সেপারেশন" তত্বের একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রদান করেন। মিলগ্রামের এক্সপেরিমেন্টের উদ্যেশ্য ছিল দুইজন মার্কিন নাগরিকের মাঝে ন্যূনতম দূরত্ব জানা। শুরুতেই উনি একজন টার্গেট মানুষ ঠিক করে ৫০০ মানুষ টেলিফোন বুক থেকে রেন্ডমলি পছন্দ করে সবার নামে একটি করে পোস্টকার্ড পাঠালেন। পোস্টকার্ডে ইন্সট্রাকশন ছিল "আপনি যদি টার্গেট ব্যক্তিকে সরাসরি চিনেন তাহলে উনার কাছে ...

The Prince Charming

So, let's talk about Mr. Prince Charming. রাজকুমারীর রুপকথার গল্প গুলো পড়লে একটা বিষয় সব সময় ফুটে ওঠে তা হলো প্রত্যেকটা গল্পে একজন সুপুরুষ যুবরাজ থাকবে যে রাজকুমারীকে সমূহ বিপদের হাত থেকে বাঁচাবে এবং they will end up living happily forever! খুব ছোট বেলায় এই গল্প গুলো বাচ্চাদের মনে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয় আর কোন কারণে নয়, লিঙ্গ পরিচয়কে সমাজের প্রচলিত কাঠামোর আদলে গ্রহণ করে নেওয়ার জন্য। এর ইমপ্যাক্টটা হয় খুব মজার। প্রত্যেকটা ছেলে প্রেমে পড়লে সে মনে করে, তার ভালোবাসার মানুষটি প্রচ ণ্ড কষ্টে আছে এবং তাকে যে করেই হোক তার রাজকুমারীকে উদ্ধার করতে হবে। মেয়েরা সাধারণত এ ধরণের আবেগের প্রতি এক ধরণের পাল্টা আবেগ অনুভব করে এবং এককেন্দ্রিক গুরুত্বকে আপন করে নিয়ে প্রত্যাশিত ভুমিকা পালন করতে থাকে। সমস্যাটা হয় বিয়ে হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরে, যখন আকর্ষণটা কাটতে আরম্ভ করে কেননা মানব সম্প্রদায়ের জন্য যে কোন আকর্ষণের উপযোগ তার যোগানের পরিমাণের সাথে বিপরীত মুখী সম্পর্ক বজায় রাখে। অবশ্য একদম প্রগৈতিহাসিক সময়কাল থেকেই মানব সম্প্রদায়ের পুরুষ সদস্যদের প্রধান ভুমিকা ছিল খাদ্য সংগ্রহ এবং নিজের ...